এখানে প্রাণপ্রাণী অজস্র ঢেউ খেলে
অগণিত কঙ্কালের ভিড় : কীট-পোকা, পশু-পাখি-
হাড়-অস্থির বোঝাস্তূপ : এখানে তাদের নীড়
মৃত্তিকার গভীর উদরে তারা বসবাস করছে অনন্তকাল-
ধনী, দরিদ্র, কাঙাল, ভিক্ষুক, রাজ-মহারাজ সমস্ত কলেবর
এখানে একগৃহে একাসনে পেয়েছে ঠাঁই!
অহরহ বিধির হিসাব সমগ্র দেহে বিলীন-
কঠিন শাস্তির শৃঙ্খলভেড়ী লেগেছে তাদের কর-পদে!
মাটির মমতা তারা পায় নি কোনদিন-
পাবে নাকি কোনকালে?
ত্রিশূলের ন্যায় ভুজঙ্গের দংশন-
পোকা-মাকড়ের কামড়ে ব্যথিতাস্থি ঝরছে ঝরঝর!
পাপের বোঝা পিঠে বয়ে কে এসেছ বন্ধু!
এ কঠোর নগরীতে।
হেথা নয় ভূ-সিংহাসন-
যার ডাকে কাঁপত থরথর ধরণী!
নাচত অম্বর : কাঁদত বনবনানী-পর্বত!
তুমি বিরাট রাজাধিরাজ : প্রভুর প্রভু-
হেথা সবার পিছে রইবে আজ!
হেথা বৃথা তোমার সপ্ত হাতের শক্ত করাঘাত
হেথা বৃথা তোমার কটাক্ষ-আঁখির রক্তচাপ
হেথা মিশবে মাটির দেহ মাটির উদরে
হেথা ভিখারি তুমি ঝুলি ফেলেছ : ভিক্ষাপাত্রখানি-
হেথা দয়ার সাগর : বিধাতা- সমগ্র সৃষ্টির মালিক
শুনবে না তোমার করুণাহ্বান-
বন্ধু,
তোমার মুদ্রাদোষে তুমি দোষী-
মজলুমের প্রতি জুলুম করেছ : করেছ অবিচার-
নিষ্ঠাবানের অনিষ্ট করেছ : করেছ অত্যাচার-
সুবিচার পায় নিকো কেউ কোনদিন তোমার দরবারে!
বন্ধু,
ভুল করেছ হায়-
তুমি কেন বুঝলে না দুনিয়ায়!
কেমন হবে কবরের মায়া,
কী যে ভয়ানক সমাধিবাস!
সোনার শিরোভূষণ পরেছিলে ধরায়,
আসন পেতেছিলে আরাম-কেদারায়!
আজ কণ্টকমুকুট পরতে হবে মাথায়-
আসন মৃত্তিকায়।
১৯ কার্তিক, ১৪০৭-
কাঞ্চন নগর, চট্টগ্রাম।